Rider Safety – BDBIKERZ
গুরুত্বপূর্ণ রাইডিং টিপস – নিরাপদ রাইডিং
মোটরসাইকেল হল এমন একটি যানবাহন যা রাইড করা খুবই রোমাঞ্চকর এবং তার সাথে বিপজ্জনকও! তাই সকল রাইডারের উচিৎ কিছু নিয়ম মেনে নিরাপত্তার সাথে বাইক রাইড করা। মোটরসাইকেল রাইডিং-এর সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট দেয়া হল :

১. উপযুক্ত গিয়ার পরিধান করুন :
প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার মোটরসাইকেল চালকদের জন্য প্রথম সুরক্ষার স্তর। একটি ভাল মানের সার্টিফাইড হেলমেট, বিশেষ করে ফুল-ফেস হেলমেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি মাথা এবং মস্তিষ্ককে গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা করে। হাত এবং পায়ের জন্যও সেফটি গিয়ার পরিধান করতে হবে। এর সাথে টেকসই উপকরণ যেমন লেদার বা টেক্সটাইল দিয়ে তৈরি জ্যাকেট, গ্লাভস, শক্ত বুট এবং রাইডিং প্যান্ট পরিধান করলে সেগুলো অ্যাকসিডেন্টের ক্ষেত্রে শরীরকে রক্ষা করবে। রিফ্লেকটিভ বা উজ্জ্বল রঙের জামাকাপড় দৃশ্যমানতা বাড়ায়, বিশেষত রাতে রাইডিং এর ক্ষেত্রে।
২. নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ :
আপনার মোটরসাইকেলকে সর্বদা টিপ-টপ কন্ডিশনে রাখা আপনার এবং আপনার মোটরসাইকেলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টায়ার প্রেশার ঠিক রাখুন এবং টায়ারের গ্রিপ নিয়মিত পরীক্ষা করুন, কারণ এগুলো বাইকের কন্ট্রোলিং এবং ব্রেকিং-এর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এর সাথে ব্রেক-লাইট, হেড-লাইট, টেইল-লাইট এবং সিগন্যাল-লাইট পরীক্ষা করুন যে সেগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা।
৩. সচেতন এবং সতর্ক থাকুন :
সর্বদা সচেতন হয়ে চালান এবং বেশি ক্লান্ত থাকলে রাইডিং এড়িয়ে চলুন, কারণ অতিরিক্ত ক্লান্তি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। সর্বদা রাস্তায় মনোযোগ দিন এবং আপনার চারপাশে খেয়াল রাখুন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কোনভাবেই মোটরসাইকেল বা অন্য কোন প্রকার যানবাহন চালাবেন না।
৪. ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলুন :
ট্রাফিক আইন মেনে চলা প্রত্যেক রাইডারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গতি সীমা, সঠিক লেন, ট্রাফিক সিগন্যাল এবং সড়ক চিহ্ন মেনে চলুন। লেন পরিবর্তন বা বাঁক নেয়ার আগে রাস্তার অন্য যানবাহনের চালকদের সেটা জানাতে স্পষ্টভাবে সংকেত দিন। সর্বদা লুকিং-গ্লাসে নজর রাখুন এবং ব্লাইন্ড স্পটগুলি পরীক্ষা করুন।
৫. প্রতিরক্ষামূলক রাইডিং :
ইমারজেন্সি ব্রেকিং-এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট জায়গা পাওয়ার জন্য অন্য যানবাহনের থেকে সবসময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। চৌরাস্তা গুলিতে সতর্ক থাকুন, যেখানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে সেখানে ধরে নিন যে অন্যান্য চালকরা আপনাকে দেখতে পাবে না, সেরকম হিসেব করে রাইড করবেন। আপনার মোটরসাইকেলের হেডলাইট দিনের বেলাতেও ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার মোটরসাইকেলের ভিজিবিলিটি বাড়বে, অনেক দূর থেকে সবাই খেয়াল করবে।
৬. প্রশিক্ষণ :
একটি মোটরসাইকেল নিরাপত্তা কোর্স করলে আপনার রাইডিং দক্ষতা এবং জ্ঞান বাড়বে। এই কোর্সগুলি প্রতিরক্ষামূলক রাইডিং কৌশল, মোটরসাইকেলের সঠিক পরিচালনা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ট্রেনিং দেয়। নতুন রাইডারদের জন্য ক্রমাগত শিক্ষা নেয়া এবং অনুশীলন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. আবহাওয়া বিবেচনা :
আবহাওয়া পরিস্থিতি মোটরসাইকেল নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বৃষ্টির পানি রাস্তাগুলিকে পিচ্ছিল করে তোলে এবং দৃশ্যমানতা হ্রাস করে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানোর প্রয়োজন হলে কম গতিতে চালান, অন্যান্য যানবাহন থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং স্কিডিং এড়াতে হঠাৎ ব্রেক করা থেকে বিরত থাকুন। জলরোধী পোশাক অর্থাৎ রেইনকোট এবং অন্যান্য সেফটি গিয়ার ব্যাবহার করুন।
৮. গ্রুপ রাইডিং শিষ্টাচার :
যখন গ্রুপ রাইড করবেন তখন সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক রাইডিং প্রোটোকলগুলি অনুসরণ করুন। প্রত্যেক রাইডার একে অপরের মাঝে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখুন। হাত-পায়ের সঠিক সংকেত ব্যবহার করে কার্যকরভাবে রাইডারদের মাঝে যোগাযোগ করুন এবং সাইড-বাই-সাইড রাইডিং এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ায়।
উপরোক্ত নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপগুলি মেনে চলার মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালকরা রাইডিংয়ের সকল ঝুঁকিগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। মোটরসাইকেল চালানোর স্বাধীনতা এবং রোমাঞ্চ অতুলনীয়, তবে নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ সবার। আপনাদের প্রতিটি রাইড উপভোগ্য এবং নিরাপদ হোক।
লেখা : প্রান্ত শাহরিয়ার